নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ-
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জমি দখলে নিতে প্রতিপক্ষের ওপর বিএনপির নেতাকর্মীদের দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে গোলাম মোস্তফা নামে এক মালয়শিয়া প্রবাসীর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে সাদিপুর ইউনিয়নের সিংরাব গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহীম ও তার চাচা সুবেদ আলী মারধরের শিকার হন।
তারা অভিযোগ করেন, গোলাম মোস্তফা জমি দখল নিতে বিএনপি নেতা আজহারুল ইসলাম মান্নানের লোকদের ডেকে এনে তাদেরকে মারধর করে এবং গুলি করার হুমকি দেন।
আহত আব্দুর রহীম বলেন, ‘আমাকে গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে সোহেল ও জসিম শিকদার মেরেছে। তারা সোনারগাঁ উপজেলায় বিএনপির এমপি পদপ্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের নামে এ এলাকায় রাজনীতি করে। তাদের সঙ্গে সাদ্দাম, অপু, ভুট্টু ও তার ছেলেরাসহ আরও অনেকে ছিল।’
তিনি বলেন, “মারধরের সময় তারা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘আমরা মান্নানপন্থি। আমাদের এই এলাকায় রাজত্ব চলবে।’ মারধর শেষে সাদ্দাম যাওয়ার সময় বলে, ‘তুই যদি বেশি বাড়াবাড়ি করিস, জায়গা দখল দিতে আসিস তাহলে তোকে গুলি করে দিব। এসময় সাদ্দাম হুমকি দিয়ে আরও বলে, ‘এখন থেকে এই জায়গা আমাদের। যদি এই জায়গা দখল দিতে আসিস তাহলে বাড়িঘর ভাঙচুর করা হবে এবং তোদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গুলি করা হবে।”
এ ঘটনার পর জমির মালিক সুবেদ আলীর ছেলে মো. শফিউল্লাহ সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর একটি অভিযোগ দেন।
অভিযোগে বলা হয়, ‘আমি মো. শফিউল্লাহ ও আরও একজন মিলে তফসিলভুক্ত সম্পত্তি বিগত ১০-১২ বছর ধরে বায়না রেজিস্ট্রির মাধ্যমে ক্রয় করি। তবে দলিলদাতা পলাতক থাকায় আমরা সেখানে শাক-সবজি চাষ করে শান্তিপূর্ণভাবে বসতবাড়ি নির্মাণ করে ভোগ-দখল করে আসছি। কিন্তু অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের দখলীয় সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন থাকলেও তারা অবৈধভাবে সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
অভিযোগে আরও বলা হয়, ‘হামলাকারীরা আগেও জমিটি দখলের চেষ্টা করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও চলছে। এর আগে এই জায়গায় একটি দোকান ছিল সেটা পুড়িয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে গোলাম মোস্তফার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এখানে আওয়ামী লীগের ক্লাব ছিল তাই কেউ ক্ষোভ থেকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। অথচ এখানে কখনো ক্লাব ছিল না।’ অভিযোগের বিষয়ে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’ তবে তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের ডাক দিয়ে আনার ব্যাপারটি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, তার নামে জমির কাগজ থাকলেও অন্যরা ভোগ দখল করছে। দ্রুত জমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করেন তিনি। অভিযোগের বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলার ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী গোলাম মোস্তফা ও তার স্ত্রী আমাদের কাছে আসছিল। তাদের জমির কাগজ সব তার নামে থাকলেও আওয়ামী লীগের লোকেরা দখল করে আছে বলে জানায়। তাই আমার কিছু লোক সেখানে গিয়েছিল ব্যাপারটি মিটমাট করতে। তখন একটু ধাক্কাধাক্কি হয়। কিন্তু গুলি করার হুমকি দেয়ার ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।’
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আ. বারী বলেন, জমি সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থানায় দেয়া হয়েছে কিনা তা দেখে বলতে হবে।
তদন্ত বাংলা মিডিয়া লিমিটেড,কপিরাইট © তদন্ত প্রতিদিন - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Leave a Reply