স্টাফ রিপোর্টেঃ-

কীর্তনখোলা নদীর বেলতলা খেয়াঘাটের ইজারা বাতিলের দাবিতে বরিশালের চরমোনাই ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ মানববন্ধন করেছে।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে আয়োজিত এ মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দারা, ব্যবসায়ী, দিনমজুর, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, ‘চরকাউয়া খেয়া সরকারিভাবে ফ্রি করা হলেও চরমোনাই ইউনিয়নের বেলতলা খেয়াঘাট এখনও বেসরকারি ইজারার আওতায় রয়েছে। অথচ এটি চরমোনাই ইউনিয়নের হাজারো মানুষের নিত্যদিনের যাতায়াতের একমাত্র সহজ মাধ্যম। খেয়া পারাপারের জন্য শ্রমজীবী মানুষের প্রতিদিন ২০ টাকা গুনতে হচ্ছে, যা তাদের জন্য অতিরিক্ত চাপ। মোটরসাইকেল পারাপারেও নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। এই বাড়তি ব্যয় সাধারণ মানুষের ওপর চরম জুলুম।

তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর খেয়া পারাপারের ইজারা ছিল ১ কোটি ৫১ লাখ টাকা, যা এ বছর দ্বিগুণ করা হয়েছে। এত বিশাল পরিমাণ অর্থের বোঝা জনগণের কাঁধেই চাপানো হচ্ছে। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে এই খেয়া পারাপারের ইজারা বাতিল করা হোক। অন্যথায়, চরমোনাই ইউনিয়নের জনগণ দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।’

স্থানীয়দের অভিযোগ, বেলতলা খেয়াঘাট একসময় সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এটি বেসরকারি ইজারার আওতায় এনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হচ্ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ, শিক্ষার্থী, কৃষক ও কর্মজীবীরা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মী খন্দকার রাকিব বলেন, ‘এটি আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। ইজারা নেওয়ার পর থেকে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই, এটি যেন আগের মতো সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।’

স্থানীয় ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহনের জন্য এই খেয়াঘাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইজারার ফলে পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ধাক্কা। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।’

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, বেলতলা খেয়াঘাট সরকারিভাবে উন্মুক্ত না করলে এখানকার জনগণের জীবনযাত্রা আরও কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত এই ইজারা বাতিলের দাবি জানান।